রাজধানীর বনানীতে দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের গাড়িচালক বিল্লালকে ৪ দিনের ও দেহরক্ষী রহমতকে ৩ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকার মহানগর হাকিম লস্কর সোহেল রানার আদালতে তাদের হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পুলিশ পরিদর্শক ইসমত আরা এমি।
শুনানি শেষে আদালত বিল্লালের ৪ দিন ও রহমতের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সোমবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জন গ্রেপ্তার হলেন।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ওয়ারী থানার নবাবপুর রোডের দি-নিউ ঢাকা বোর্ডিং থেকে আসামি মোঃ বিল্লাল হোসেনকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সুজন নামে সেখানে রুম ভাড়া করেছিলেন। বিল্লালের গ্রামের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার দাড়িডোমা গ্রামে।
জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল র্যাবকে জানিয়েছেন, ওই দিন দুই তরুণীর ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল। হোটেলের রুমের মধ্যে তাদের হাতে ইয়াবা দিয়েও ভিডিও করা হয়। বলা হয়েছিল, তারা যদি এই ঘটনা ফাঁস করে দেয় তাহলে ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে মামলা দিয়ে দিয়ে তাদের ধরিয়ে দেয়া হবে।
তবে বিল্লাল জানান, মোবাইলে ধারণ করা সেই ভিডিও তিনি ডিলেট করে দিয়েছে। ধষর্ণের সময় বিল্লাল বাথরুমে ছিলেন এবং সে সমস্ত ঘটনা দেখেছেন।
গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলের সামনে থেকে সন্ধ্যায় সাফাতের বডিগার্ড রহমতকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। রহমত তার এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিল। তার কাছ থেকে একটি শটগান এবং ১০ রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে।
গেলো ৫ মে ভিকটিম দুই তরুণীর একজন বনানী থানায় অভিযোগ দেন। অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, গেলো ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে সাফাত ও নাঈম দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। অন্য তিনজন ছিলেন সহায়তাকারী।
৬ মে মামলার পর পালিয়ে যাওয়া সাফাত ও সাদমানকে ১১ মে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা রিমান্ডে রয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের রিমান্ডে নেয়া হয় মামলার এজাহার অনুযায়ী, গেলো ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে দুই তরুণীকে ধর্ষণ করেন সাফাত ও নাঈম। সাদমানসহ অন্য ৩ জন ছিলেন সহযোগী।
এর মধ্যে সাফাত রাজধানীর অভিজাত স্বর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে।
ওই দুই তরুণী গেলো বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালতে জবানবন্দি দেন। ঘটনার মাসখানেক পর ৬ মে ১ তরুণী বনানী থানায় মামলা করার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সাফাত গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশের ব্যাপক সমালোচনাও হয়।
আর/জেএইচ